সুরা মু’মিনুন

মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১]

যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র; [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২]

যারা অনর্থক কথা-বার্তায ় নির্লিপ্ত, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩]

যারা যাকাত দান করে থাকে [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪]

এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫]

তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬]

অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭]

এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার থাকে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮]

এবং যারা তাদের নামাযসমূহের খবর রাখে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯]

তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০]

তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানের উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে চিরকাল থাকবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১]

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১২]

অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৩]

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৪]

এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৫]

অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৬]

আমি তোমাদের উপর সুপ্তপথ সৃষ্টি করেছি এবং আমি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনবধান নই। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৭]

আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৮]

অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্যে খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করেছি। তোমাদের জন্যে এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১৯]

এবং ঐ বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্যে তৈল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২০]

এবং তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সমূহের মধ্যে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে। আমি তোমাদেরকে তাদের উদরস্থিত বস্তু থেকে পান করাই এবং তোমাদের জন্যে তাদের মধ্যে প্রচুর উপকারিতা আছে। তোমরা তাদের কতককে ভক্ষণ কর। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২১]

তাদের পিঠে ও জলযানে তোমরা আরোহণ করে চলাফেরা করে থাক। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২২]

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন মাবুদ নেই। তোমরা কি ভয় কর না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৩]

তখন তার সম্প্রদায়ের কাফের-প্রধা নরা বলেছিলঃ এ তো তোমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়। সে তোমাদের উপর নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে ফেরেশতাই নাযিল করতেন। আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এরূপ কথা শুনিনি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৪]

সে তো এক উম্মাদ ব্যক্তি বৈ নয়। সুতরাং কিছুকাল তার ব্যাপারে অপেক্ষা কর। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৫]

নূহ বলেছিলঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর; কেননা, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৬]

অতঃপর আমি তার কাছে আদেশ প্রেরণ করলাম যে, তুমি আমার দৃষ্টির সামনে এবং আমার নির্দেশে নৌকা তৈরী কর। এরপর যখন আমার আদেশ আসে এবং চুল্লী প্লাবিত হয়, তখন নৌকায় তুলে নাও, প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং তোমার পরিবারবর্গকে, তাদের মধ্যে যাদের বিপক্ষে পূর্বে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের ছাড়া। এবং তুমি জালেমদের সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো না। নিশ্চয় তারা নিমজ্জত হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৭]

যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌকায় আরোহণ করবে, তখন বলঃ আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদেরকে জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে উদ্ধার করেছেন। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৮]

আরও বলঃ পালনকর্তা, আমাকে কল্যাণকর ভাবে নামিয়ে দাও, তুমি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:২৯]

এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং আমি পরীক্ষাকারী। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩০]

অতঃপর অন্য এক সম্প্রদায় আমি তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলাম। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩১]

এবং তাদেরই একজনকে তাদের মধ্যে রসূলরূপে প্রেরণ করেছিলাম এই বলে যে, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন মাবুদ নেই। তবুও কি তোমরা ভয় করবে না? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩২]

তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানরা যারা কাফের ছিল, পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলত এবং যাদেরকে আমি পার্থিব জীবনে সুখ-স্বাচ্ছ ন্দ্য দিয়েছিলাম, তারা বললঃ এতো আমাদের মতই একজন মানুষ বৈ নয়। তোমরা যা খাও, সেও তাই খায় এবং তোমরা যা পান কর, সেও তাই পান করে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৩]

যদি তোমরা তোমাদের মতই একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা নিশ্চিতরূপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৪]

সে কি তোমাদেরকে এই ওয়াদা দেয় যে, তোমরা মারা গেলে এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হলে তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৫]

তোমাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা কোথায় হতে পারে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৬]

আমাদের পার্থিবজীবনই একমাত্র জীবন। আমরা মরি ও বাঁচি এখানেই এবং আমারা পুনরুত্থিত হবো না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৭]

সে তো এমন ব্যক্তি বৈ নয়, যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে এবং আমরা তাকে বিশ্বাস করি না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৮]

তিনি বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে সাহায্য কর, কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৩৯]

আল্লাহ বললেনঃ কিছু দিনের মধ্যে তারা সকাল বেলা অনুতপ্ত হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪০]

অতঃপর সত্য সত্যই এক ভয়ংকর শব্দ তাদেরকে হতচকিত করল এবং আমি তাদেরকে বাত্যা-তাড় িত আবর্জনা সদৃশ করে দিলাম। অতঃপর ধ্বংস হোক পাপী সম্প্রদায়। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪১]

এরপর তাদের পরে আমি বহু সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪২]

কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট কালের অগ্রে যেতে পারে না। এবং পশ্চাতেও থকাতে পারে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৩]

এরপর আমি একাদিক্রমে আমার রসূল প্রেরণ করেছি। যখনই কোন উম্মতের কাছে তাঁর রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলেছে। অতঃপর আমি তাদের একের পর এক ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে কাহিনীর বিষয়ে পরিণত করেছি। সুতরাং ধ্বংস হোক অবিশ্বাসীরা। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৪]

অতঃপর আমি মূসা ও হারুণকে প্রেরণ করেছিলাম আমার নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট সনদসহ, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৫]

ফেরআউন ও তার অমাত্যদের কাছে। অতঃপর তারা অহংকার করল এবং তারা উদ্ধত সম্প্রদায় ছিল। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৬]

তারা বললঃ আমরা কি আমাদের মতই এ দুই ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব; অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাস? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৭]

অতঃপর তারা উভয়কে মিথ্যাবাদী বলল। ফলে তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হল। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৮]

আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৪৯]

এবং আমি মরিয়ম তনয় ও তাঁর মাতাকে এক নিদর্শন দান করেছিলাম। এবং তাদেরকে এক অবস্থানযোগ্য স্বচ্ছ পানি বিশিষ্ট টিলায় আশ্রয় দিয়েছিলাম। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫০]

হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫১]

আপনাদের এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫২]

অতঃপর মানুষ তাদের বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে। প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৩]

অতএব তাদের কিছু কালের জন্যে তাদের অজ্ঞানতায় নিমজ্জত থাকতে দিন। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৪]

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ত তি দিয়ে যাচ্ছি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৫]

তাতে করে তাদেরকে দ্রুত মঙ্গলের দিকে নিয়ে যাচ্ছি? বরং তারা বোঝে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৬]

নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তার ভয়ে সন্ত্রস্ত, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৭]

যারা তাদের পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৮]

যারা তাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করে না [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৫৯]

এবং যারা যা দান করবার, তা ভীত, কম্পিত হৃদয়ে এ কারণে দান করে যে, তারা তাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬০]

তারাই কল্যাণ দ্রুত অর্জন করে এবং তারা তাতে অগ্রগামী। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬১]

আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি না। আমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬২]

না, তাদের অন্তর এ বিষয়ে অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এ ছাড়া তাদের আরও কাজ রয়েছে, যা তারা করছে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৩]

এমনকি, যখন আমি তাদের ঐশ্বর্যশালী লোকদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করব, তখনই তারা চীৎকার জুড়ে দেবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৪]

অদ্য চীৎকার করো না। তোমরা আমার কাছ থেকে নিস্কৃতি পাবে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৫]

তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো পায়ে সরে পড়তে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৬]

অহংকার করে এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প-গুজব করে যেতে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৭]

অতএব তারা কি এই কালাম সম্প�েক চিন্তা-ভাবন া করে না? না তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে, যা তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে আসেনি? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৮]

না তারা তাদের রসূলকে চেনে না, ফলে তারা তাঁকে অস্বীকার করে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৬৯]

না তারা বলে যে, তিনি পাগল ? বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন এবং তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭০]

সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনা র অনুসারী হত, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্ত�ী সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত। বরং আমি তাদেরকে দান করেছি উপদেশ, কিন্তু তারা তাদের উপদেশ অনুধাবন করে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭১]

না আপনি তাদের কাছে কোন প্রতিদান চান? আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭২]

আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন; [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৩]

আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৪]

যদি আমি তাদের প্রতি দয়া করি এবং তাদের কষ্ট দূর করে দেই, তবুও তারা তাদের অবাধ্যতায় দিশেহারা হয়ে লেগে থাকবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৫]

আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না এবং কাকুতি-মিনু তিও করল না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৬]

অবশেষে যখন আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দ্বার খুলে দেব, তখন তাতে তাদের আশা ভঙ্গ হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৭]

তিনি তোমাদের কান, চোখ ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন; তোমরা খুবই অল্প কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে থাক। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৮]

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে রেখেছেন এবং তারই দিকে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৭৯]

তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রি র বিবর্তন তাঁরই কাজ, তবু ও কি তোমরা বুঝবে না? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮০]

বরং তারা বলে যেমন তাদের পূর্ববর্তীরা বলত। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮১]

তারা বলেঃ যখন আমরা মরে যাব এবং মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব ? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮২]

অতীতে আমাদেরকে এবং আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এই ওয়াদাই দেয়া হয়েছে। এটা তো পূর্ববতীদের কল্প-কথা বৈ কিছুই নয়। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৩]

বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কার? যদি তোমরা জান, তবে বল। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৪]

এখন তারা বলবেঃ সবই আল্লাহর। বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৫]

বলুনঃ সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৬]

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহ। বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৭]

বলুনঃ তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কতৃর্�ত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৮]

এখন তারা বলবেঃ আল্লাহর। বলুনঃ তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৮৯]

কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯০]

আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯১]

তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯২]

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৩]

হে আমার পালনকর্তা! তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৪]

আমি তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৫]

মন্দের জওয়াবে তাই বলুন, যা উত্তম। তারা যা বলে, আমি সে বিষয়ে সবিশেষ অবগত। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৬]

বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৭]

এবং হে আমার পালনকর্তা! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৮]

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:৯৯]

যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০০]

অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০১]

যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০২]

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৩]

আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৪]

তোমাদের সামনে কি আমার আয়াত সমূহ পঠিত হত না? তোমরা তো সেগুলোকে মিথ্যা বলতে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৫]

তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দূর্ভাগ্যের হাতে পরাভূত ছিলাম এবং আমরা ছিলাম বিভ্রান্ত জাতি। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৬]

হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা গোনাহগার হব। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৭]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৮]

আমার বান্দাদের একদলে বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১০৯]

অতঃপর তোমরা তাদেরকে ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করতে। এমনকি, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল এবং তোমরা তাদেরকে দেখে পরিহাস করতে। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১০]

আজ আমি তাদেরকে তাদের সবরের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে, তারাই সফলকাম। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১১]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১২]

তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৩]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ, যদি তোমরা জানতে? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৪]

তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৫]

অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৬]

যে কেউ আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, তার কাছে যার সনদ নেই, তার হিসাব তার পালণকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৭]

বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী। [সুরা মু’মিনুন - ২৩:১১৮]