সুরা ওয়াক্বিয়া

যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১]

যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২]

এটা নীচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩]

যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪]

এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫]

অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬]

এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭]

যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮]

এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯]

অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১০]

তারাই নৈকট্যশীল, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১১]

অবদানের উদ্যানসমূহে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১২]

তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৩]

এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৪]

স্বর্ণ খচিত সিংহাসন। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৫]

তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৬]

তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোরেরা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৭]

পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৮]

যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং বিকারগ্রস্ত ও হবে না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:১৯]

আর তাদের পছন্দমত ফল-মুল নিয়ে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২০]

এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২১]

তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২২]

আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৩]

তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৪]

তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারাপ কথা শুনবে না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৫]

কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৬]

যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৭]

তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৮]

এবং কাঁদি কাঁদি কলায়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:২৯]

এবং দীর্ঘ ছায়ায়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩০]

এবং প্রবাহিত পানিতে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩১]

ও প্রচুর ফল-মূলে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩২]

যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৩]

আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৪]

আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৫]

অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৬]

কামিনী, সমবয়স্কা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৭]

ডান দিকের লোকদের জন্যে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৮]

তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৩৯]

এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪০]

বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪১]

তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪২]

এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৩]

যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৪]

তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৫]

তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৬]

তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৭]

এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও! [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৮]

বলুনঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৪৯]

সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫০]

অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫১]

তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫২]

অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৩]

অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৪]

পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৫]

কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৬]

আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৭]

তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৮]

তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৫৯]

আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬০]

এ ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই, যা তোমরা জান না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬১]

তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬২]

তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৩]

তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৪]

আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৫]

বলবেঃ আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম; [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৬]

বরং আমরা হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৭]

তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৮]

তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৬৯]

আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭০]

তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭১]

তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭২]

আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৩]

অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৪]

অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৫]

নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ-যদি তোমরা জানতে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৬]

নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৭]

যা আছে এক গোপন কিতাবে, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৮]

যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৭৯]

এটা বিশ্ব-পালনক র্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮০]

তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮১]

এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮২]

অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৩]

এবং তোমরা তাকিয়ে থাক, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৪]

তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৫]

যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৬]

তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ? [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৭]

যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়; [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৮]

তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৮৯]

আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯০]

তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্যে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯১]

আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়, [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯২]

তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯৩]

এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯৪]

এটা ধ্রুব সত্য। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯৫]

অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন। [সুরা ওয়াক্বিয়া - ৫৬:৯৬]